রবীন্দ্রনাথের বংশ পরিচয়ের গল্প(গাজাখুড়ি নয়)

রবীন্দ্রনাথের বংশ পরিচয়ের গল্প(গাজাখুড়ি নয়)

৩০শে পৌষ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ

১৩ই জানুয়ারি ২০১৭

৩০শে পৌষ ১৪২৩ বঙ্গাব্দ ॥ ১৩ই জানুয়ারি ২০১৭

৫৩৬ শব্দ · ⏱ পড়তে আনুমানিক মিনিট লাগবে

n

n

n

n

n

n

n

nরবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের বংশ ও শিকড় সম্পর্কে সুনীলnগঙ্গোপধ্যায়ের “সেই সময়” উপন্যাসে গল্প আছে মজার তবে গাজাখুড়িnনয়।রবিঠাকুরের পরিবার কলকাতার সবচেয়ে প্রাচীন ব্রাক্ষ্মণ পরিবার।তাদেরnপূর্বপুরুষদের বলা হত “পীরালীর বামুন”।কারণ তাদের পরিবারের সাথে একজনnমুসলমান পরগনাদারের নাম যুক্ত আছে।

n

n

n

nযশোরের সেনাপতি খান জাহান আলীর জনৈক হিন্দু কর্মচারীর(নামnজানা যায় নি) গভীর প্রণয় হয়েছিল এক মুসলিম নারীর সাথে।তাকে বিয়ে করায় কর্মচারীটিরnজাত যায় এবং সে মুসলিম হতে বাধ্য হয়।কর্মচারীটির জন্ম পশ্চিমবঙ্গের নবদ্বীপেরnপিরল্যা গ্রামে ছিল বলে পরে তার মুসলমানি নাম হয় পীর আলী।যদিও মুসলমান হবার পর তারnখাতা কলমে নাম ছিল মামুদ তাহির।তবু তিনি পীর আলী নামেই বেশি পরিচিত ছিলেন(কারণnতখনকার দিনে বাঙ্গালীদের নামের সাথে পদবীর বদলে গোত্র ও গ্রামের নাম যুক্ত থাকারnরেওয়াজ ছিল।গ্রামের নাম যেহেতু ছিল পিড়ল্যা তাই লোকমুখে বলতে বলতে হয়ে গেল পীরnআলী)।এই পীর আলীকে খান জাহান আলী ভালবেসে “চেঙ্গুঠিয়া”নামে একটি পরগনাnমুসলিম হওয়ার পুরস্কাররূপ দান করেন।পরগনাদার হিসেবে তিনি বেশ খ্যাতি কুড়ান।

n

n

n

nকামদেব ও জয়দেব নামে দুই দেওয়ান কাজ করত তার পরগনায়।তারাnএকদিন এক ভয়ানক রসিকতা করে বসল পীর আলীর সাথে।রোজার মাস।রোজাদার পীর আলীর হাতে ছিলnএকটি গন্ধ লেবু,মাঝে মাঝে তিনিnতা শুঁকছেন এবং সবার সাথে কথা বলছেন।এমন সময় জয়দেব ও কামদেবের মাঝে কেউ একজন বলল,”উজির সাহেব,আপনার আজকের রোজাnতো ভঙ্গ হয়ে গেল।”

n

nপীর আলী বিষয়টি জানতেন না।অবাক পীরকে তখন ব্যাখ্যা দেয়া হলnঘটনার।শাস্ত্রমতে,”ঘ্রাণেন অর্ধnভোজনম্”মানে গন্ধেই আহার হয়।তাই রোজা হল না।

n

n

n

n

n

n

n

nচালাক পীর আলী কামদেব ও জয়দেবকে জব্দ করার জন্য এক কৌশলnনিলেন।একদিন পীর আলী দরবারে বহু হিন্দুকে নিমন্ত্রণ করলেন।কথাবার্তার এক ফাকেnভৃত্যকে ঈসারা করলেন।একটু পরই দরবার কক্ষে আনা হল কয়েকটি জ্বলন্ত উনুন।উনুনের উপরnকড়াইতে গরুর মাংস রান্না হচ্ছে।গরুর মাংসের গন্ধ পেয়ে অনেক হিন্দু নাকে কাপড় দিলেন,সভা ছেড়ে পালালেন,কিন্তু পীর আলীnচেপে ধরলেন কামদেব আর জয়দেবকে।বললেন”তোমরা পালাচ্ছ কেন?শাস্ত্র মতেnতোমাদের ও অর্ধ ভোজন হয়েছে।এবং সে অনুযায়ী তোমাদেরও জাত গ্যাছে।”

n

n

n

nধর্মান্তরিত হবার পরে তাদের নাম হল জামালউদ্দীন ওnকামালউদ্দীন।কিন্তু ধর্মান্তরিত হবার পরও তৎকালীন রক্ষণশীল ও কড়া হিন্দু সমাজেরnহাত থেকে তাদের আত্মীয় স্বজন কেউ নিস্তার পেল না।তারা মুসলমান হয়ে বাঁচলেও তাদেরnআত্মীয় স্বজনরা কেউ হল কোণঠাসা কেউ হল একঘরে।তাদেরকে কেউ পুরো বামুন বলত না,বলত পীরালীরnবামুন।কামদেব আর জয়দেবের দুই ভাই রতিদেবী ও সুখদেব সমাজের অত্যাচার সইতে না পেরেnএকজন করে গৃহত্যাগ আরেকজন টাকার জোরে সমাজে টিকে থাকলেও পীরালী অপবাদ ঘোচাতে পারলnনা।প্রজন্ম থেকে প্রজন্ম তারা বয়ে চলল এ অপবাদ।

n

n

n

nসপ্তদশ শতকের গোড়ার দিকে এই বংশের ই দুই ভাই পঞ্চানন ওnসুখদেব কাজের সন্ধানে আসে স্বগ্রাম ছেড়ে।ঘুরতে ঘুরতে তারা আসে গোবিন্দপুরnখাড়িতে।সেখানে ছিল তখন কেবল কয়েকঘর জেলে,মালো কৈবর্তের বাস।পরিধানে পটবস্ত্র,মাথায় শিখা,অতিশয় গৌর বর্ণ ওnললাটে চন্দন পরিহিত ব্রাক্ষ্মণ দেখে সেখানকার অধিবাসীরা এসে সাষ্টাঙ্গে প্রণামnকরতে লাগল।গ্রামে ব্রাক্ষ্মণদের আশ্রয় দেয়া পুণ্যের কাজ।সেখানে তাদের ঠাঁই হয়েnগেল।তখন গ্রামের মানুষ ভক্তিভরে তাদের ডাকতো “ঠাকুর” বলে।

n

n 

n

nগোবিন্দপুর,সুতানটি ও কলকাতা নামে তিনটি গ্রাম জুড়েnইংরেজরা তখন কেবল নতুন একটি শহরের পত্তন করেছে ।গোবিন্দপুর খাঁড়ি দিয়ে জাহাজnচলাচলের জন্য এটিকে কেটে প্রশস্ত করা হচ্ছে।গ্রামের লোকদের সাথে যোগাযোগ করার জন্যnসাহেবরা যখন আসে তখন গ্রামের লোকেরা তাদের সাথে কথা বলার সাহস না পেয়ে এগিয়ে দেয়nতাদের “ঠাকুর”দের।সাহেবরা সঠিক উচ্চারণ করতে পারে না,বলে টেগোর।সেই থেকে ঘুচলnতাদের বংশীয় অপবাদ পীরালীরnবামুন” ।সেই থেকে পরিচিত হল তারা ঠাকুর নামে।এভাবেই শুরু।পরবর্তীতে ইংরেজদেরnসাথে যোগাযোগ ও কর্ম দক্ষতার সুবাদে প্রজন্মান্তর ধরে ঠাকুর পরিবার হয়ে গেলnকলকাতার শ্রেষ্ঠ ধনী।

n

n

n