
একদা শ্রদ্ধেয় সুশান্ত বাবু সমাচার
৮ই কার্তিক ১৪২৩ বঙ্গাব্দ
২৩শে অক্টোবর ২০১৬
৮ই কার্তিক ১৪২৩ বঙ্গাব্দ ॥ ২৩শে অক্টোবর ২০১৬
৫৩৮ শব্দ · ⏱ পড়তে আনুমানিক ৩ মিনিট লাগবে
n
n
n
n
nইংলান্ড-বাংলাদেশ ম্যাচ এবং আম্লীগ সম্মেলন ছাপিয়ে যে বিষয়টি মানুষকে আহত ও নক করে যাচ্ছে তা হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়কে কেন্দ্র করে সুশান্ত পালের স্ট্যাটাস। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ে সুশান্ত পালের স্ট্যাটাসে আমি মর্মাহত। এই ভদ্রলোককে আমি যথেস্ট শ্রদ্ধা করতাম। আমি কখনোই পড়ুয়া এবং সরকারী চাকুরীর কথা ভাবিনি।কিন্তু এই ব্যক্তির পড়াশুনা সংক্রান্ত কিছু পোস্ট এবং নিজের ব্যক্তি জীবনের আনুসাংগীক কিছু বিষয়ের কারণে আমার মত এই ভ্যাগাবন্ড আর আবাল গোছের মৌসুমী পড়ুয়াও জীবন গোছানো নিয়ে ভাবতে শুরু করেছিল।গতকাল পর্যন্তও এই ব্যক্তির বিসিএস সংক্রান্ত বা যেকোন পোস্ট ই আমার প্রতিদিনের কর্ম উদ্দীপনার খোরাক ছিল। আমাদের দেশে এপর্যন্ত ৩৭ বার বিসিএস পরীক্ষা হয়েছে। কিন্তু উনি ছিলেন ভাগ্যবান সেই বিসিএস ক্যাডার যিনি ফেসবুক এবং বিসিএস নিয়ে পরামর্শদাতা হিসেবে নিজস্ব কর্মপন্থার কল্যাণে পৌছে গিয়েছিলেন সেলিব্রিটি পর্যায়ে। ৩০তম বিসিএসে প্রথম স্থানকারী এই ব্যক্তির পরে আরো ৫ জন প্রথম স্থান অধিকারী এসে গিয়েছে, কিন্তু কেউই তার মত লাইম লাইটে আসেননি বা আসতে পারেননি। তিনি ছিলেন নিজের এবং দেশের ভবিষ্যৎ নির্মাণ করতে চায় এরকম লাখ লাখ তরুণ তরুনীর কাছে সত্যিকারের আইকন। তার বদৌলতে অনেকের কাছেই বিসিএস ক্যাডারশিপকে স্বপ্নের পেশা বলে প্রতীয়মান হয়েছে, তার মানে তিনি বিসিএস ক্যাডারশিপ পেশাটির অঘোষিত ব্র্যান্ড অ্যাম্বাসেডরও ছিলেন একরকম।
n
n
n
nকিন্তু তিনি একি করলেন? এ্যতদিনের তৈরি হওয়া পাহাড় সমান শ্রদ্ধা এক নিমেষে ধূলিসাত করে দিলেন! তিনি যা লিখেছেন তা এক কথায় অকথ্য। ভাষার ব্যবহারের দিক থেকে তিনি চটি লেখকদের দক্ষতাকেও হার মানিয়েছেন। আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়তে পারিনি। কিন্তু দেশের সর্বোচ্চ এবং ঐতিহ্যবাহী এ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানটির মর্যাদা কোনভাবে হানি হোক সেটা চাইনা। অন্যায়ের প্রতিবাদ করার দায়িত্ব এবং অধিকার সকলেরই আছে, কিন্তু সেটার ধরণ গ্রহোনযোগ্য না হলে প্রকৃয়াটি মাঠে মারা যেতে বাধ্য। সুশান্ত পালের ক্ষেত্রেও তাই হয়েছে। তিনি অন্যায়ের প্রতিবাদ করতে গিয়ে নিজের মেজাজ ও কান্ডজ্ঞান তথা মগজ সব হারিয়েছেন। পরবর্তীতে আইডি ডিঅ্যাকটিভ করাসহ লেখার দায় স্বীকার করে ক্ষমা প্রার্থণা ইত্যাদি চালিয়ে যাচ্ছেন। ইতোমধ্যে তাঁকে ঘিরে প্রায় শখানেক স্ক্রিন শট তার চরিত্রকে আরো বিতর্কিত করে যাচ্ছে। সত্য কথা হল এখন তিনি যা ই করুন, বাঙ্গালীর কাছে একবার চারিত্রীক দোষে দোষী হওয়া মানে সারাজীবনের জন্য গ্রহণযোগ্যতা হারানো।
n
n
n
nসুশান্ত পাল ফেসবুককে নিজের একমাত্র প্রচারমাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন, তবে উনার সাথে কয়েকটি প্রথম সারির মিডিয়াও জুটেছিল। তবে কেউ এটা খারাপ চোখে দেখেন নি, এখনো দেখার কোন কারণ আছে বলে মনে করিনা, কারণ বিসিএস এর মত সেক্টরকে আইকন হিসেবে দেখানোর প্রয়োজন আছে, এদেশে মেধাবী ছেলে মেয়েদের সরকারী চাকরীতে আকৃস্ট করার জ্ন্য যেহেতু এদেশের ৭০ শতাংশ মেধা পাচার হয়ে যায় বিদেশে। তবে এই ঘটনার পরে সরকারী বেসরকারী গুরুত্বপূর্ণ পদে কর্মরতরা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ব্যবহারের অতি সংযমী এবং দায়িত্বশীল হবেন বলেই আশা করছি।সুশা্ন্ত পালের মত পরিনতি যেন কারো নাহয় সেটাই কাম্য। তার বিরুদ্ধে ঢাবি প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা নিতে যাচ্ছে। তিনি হয়তো কোন শাস্তি পেতে যাচ্ছেন, কিন্তু তিনি যে লাখো শিক্ষার্থীর হৃদয়ের উচ্চাসন থেকে পতিত হয়েছেন, এটাই হয়তো তার জন্য সবচেয়ে বড় শাস্তি।
n
n
n
nসর্বোপরী, ‘সুশান্ত পাল’দেরকে একটু বলি। এদেশের সংখ্যালঘুদের ভীতু, চালাক ইত্যাদি অনেক রকম দূর্নাম আছে। কিন্তু তারা মেধাবী নয়, এ অপবাদ মনে হয় ঘোর শত্রুও দিতে সাহস পাবেনা কোনদিন। দেশের জনসংখ্যা ৯০ঃ১০ হলেও পদ সংখ্যা যাই থাকুক এই মেধাবীরা নিজের যোগ্যতা বলে সর্বত্রই সব বাধা বিপত্তি পেরিয়ে ভাল স্থান দখল করে যাচ্ছে, তাই তাদের দায়িত্ববোধ থাকা উচিৎ আরো অনেক বেশি, কারণ তারা স্বগোত্রের, জনসংখ্যা যত কমই হোক, স্বয়ংক্রিয় প্রতিনিধি। সমস্যা হল এই বিষয়টা কেউই তেমন মাথায় রাখেনা। তাই মাশুল গুনতেই হবে, সুশান্ত, পরিমল, সুরঞ্জীত বাবুদের এবং তাদের স্বগোত্রীয়দের।
n
